কম্পিউটারে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় চোখে সমস্যা দেখা দেয়।সাধারনত মনিটরের আলো দিনের বেলা যতটুকু উজ্জল দেখা যায় রাতের বেলাও ততটুকু উজ্জল দেখা যায়।যার ফলে রাতের বেলা দীর্ঘ সময় কাজ করলে মনিটরের ঐ আলোটুকু চোখে ঝাপসা লাগে।দিন-রাত্রির আলোর পরিবর্তনের সাথে সাম্যঞ্জস্য রেখে মনিটর স্ক্রীনের আলো পরিবর্তন হয় না বলেই এই সমস্যা দেখা দেয়।
যেহেতু চোখ একটা স্পর্শকাতর ইন্দ্রিয়। তাই চোখের ব্যাপারে আমাদের অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এর সামান্য কোনো অসুস্থতা আমাদের কাছে চরম অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মও দরুণভাবে ব্যাহত হয়।
এজন্য যা যা করতে পারেন এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে মনিটর এবং চোখের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া উচিত। যেমন—
১. প্রথমত মনিটরের গুণগত মান ভালো হওয়া চাই।
২. কম্পিউটারের মনিটর যেন সব সময় চোখের লেভেল ৪ ইঞ্চি -৮ ইঞ্চি নিচে এবং ২০ ইঞ্চি-২৮ ইঞ্চি দূরে থাকে। মনিটরটা সামান্য উপর দিকে রাখতে হবে।
৩. মনিটরের উজ্জ্বলতা এবং কনট্র্যাস্ট লেবেল চোখের সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। বর্ণের আকার যতোটা সম্ভব বড়ো এবং কম্পিউটার স্ক্রিনের ব্যাকগ্রাউন্ডের রং চোখের পক্ষে আরামদায়ক হওয়া উচিত।
৪. ঘরের আলো এমনভাবে রাখতে হবে যাতে সেই আলো সরাসরি মনিটর বা চোখের ওপর এসে প্রতিফলিত না হয়।
৫. কিবোর্ড হাতে রপ্ত হলে ভালো, না হলে কিবোর্ডকে মনিটরের যতোটা সম্ভব কাছে রাখতে হবে যাতে মনিটর থেকে কিবোর্ডে চোখের মুভমেন্ট কম হয়।
৬. যদি অফিস ঘর অপরিসর হয় এবং বাইরের দৃশ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তাহলে মনিটরের উল্টো দিকে বা প্রয়োজনে স্ক্রিন সেভাবে এমন কোনো ল্যান্ডস্কেপ রাখতে হবে যেটা অবসর সময়ে চোখকে আরাম দেবে।
এতো গেল মনিটর সংক্রান্ত সতর্কতার কথা। এবার আসা যাক চোখের সাবধানতার প্রসঙ্গে।
৭. চোখের পলক স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ১২-১৪ বার পড়ে। কিন্তু আমরা যখন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি, তখন চোখের পাতা পড়ার হার অনেক কমে আসে। চোখের পাতা কম পড়ার কারণে চোখের উপরিভাগের আর্দ্রতা কমে যায়। যারা এসিতে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে এটা আরো ত্বরান্বিত হয়। একে ’ড্রাই আই’ বলে।
চোখের পাতার অনেকগুলো কাজের মধ্যে একটা প্রধান কাজ হলো অশ্রুগ্রন্থি নিঃসৃত জলকে চোখের মধ্যে সমভাবে ছড়িয়ে দেওয়া; যাতে তা চোখের উপরিভাগের আর্দ্রতা, মসৃণতা, পুষ্টি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখে বা বাড়িয়ে তোলে। এর অভাবে চোখের নানা উপসর্গ হতে পারে, যা সিভিএস-এর জন্য ভীষণভাবে দায়ী। সে কারণে প্রথম প্রথম খুব সচেতনভাবে বার বার চোখের পাতা ফেলার অভ্যাস করতে হবে। পরবর্তী সময়ে যা সুঅভ্যাসে দাঁড়িয়ে যাবে।
৮. এরপরই আসে চোখের বিশ্রামের কথা। সাম্প্রতিককালে কম্পিউটার জগতে ২০/২০ বা ৬০/৬০ আন্তর্জাতিক স্লোগান চালু হয়েছে, যার অর্থ আপনি কম্পিউটারে টানা যতো মিনিট কাজ করবেন, ঠিক ততো সেকেন্ড সময় চোখকে বিশ্রাম দেবেন।
৯. কম্পিউটারে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে উচিত ঘাড়ের দুএকটা ব্যায়াম করা এবং নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিয়ম করে চোখেমুখে একটু পানি দিয়ে আসা।
তথ্যসুত্র: আমার দেশ